সনাথ জয়াসুরিয়া এবং শহিদ আফ্রিদি ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বোকা দুই ক্রিকেটার৷
ক্রিকেটের মানদন্ডে দুজনেই লিজেন্ড। কিন্তু বোকা কেন বললাম তাহলে?
কারন এই দুই ভদ্রলোক তাদের গোটা ক্যারিয়ারই খেলেছেন দলের স্বার্থে,ব্যক্তিগত স্বার্থে না৷ দলের জয়,জয়ে ভূমিকা রাখতে পারাটাই ছিল তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। ব্যক্তিগত অর্জন,পরিসংখ্যানের দিকে কখনোই তারা নজর দেননি।
দুজনেই ক্যারিয়ারে অসংখ্য আন্তজার্তিক ম্যাচ খেলেছেন।
দুজনের নামই আছে সর্বোচ্চ আন্তজার্তিক ম্যাচ খেলার সংক্ষিপ্ত তালিকায়৷ এত বড় লম্বা ক্যারিয়ারে তারা কখনোই ব্যক্তি পারফর্মকে প্রাধান্য দেননি দলীয় পারফর্মের উপরে৷
আফ্রিদির ওয়ানডে ব্যাটিং গড় মাত্র ২৩.৬।
এই ব্যাটিং গড় নিয়েও তাকে কেউ কোনদিন বলেনি সে দলের বোঝা কিংবা তাকে প্রয়োজন নেই। তার সেইম পজিশনে অন্যান্য দেশের ব্যাটসম্যানরা বেটার গড়ে রান করলেও পাকিস্তানে আফ্রিদি ছিলেন অটো চয়েজ। এটা শুধুমাত্র তার খেলার ধরনের কারনে। ১১৭.২৫ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন অলমোস্ট ৪০০টা (৩৯৮টা) ওয়ানডে ম্যাচে৷ ভাবা যায়?
আফ্রিদি যেদিন ৫০+ রান করেছেন এবং একাধিক উইকেট নিয়েছেন এরকম কোন ম্যাচে পাকিস্তান হারেনি। আফ্রিদির শূন্য রান নিয়ে তাকে সমালোচনা করা যায় সর্বোচ্চ,কিন্তু সে কখনোই দলের বোঝা ছিলেন না। তার ব্যাটিং এপ্রোচ পরিবর্তন করেননি। যদি একটু নিজের পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিতেন তবে গড়টা আরো ভালোই থাকতো। সে ক্যাপাবিলিটি তার ছিল। কিন্তু ঐ যে বললাম সে নিজের জন্যে খেলেনি।
শচীন টেন্ডুলকারের পরে সর্বোচ্চ ওয়ানডে খেলেছেন সনাথ জয়াসুরিয়া ৪৪৫টি।
এই ৪৪৫ ওয়ানডে খেলে ১৩ হাজার+ রান করেছেন তিনি৷ গড় মাত্র ৩২.৪০। বিশ্বাসযোগ্য?
হ্যা,এটাই ঠিক। কিন্তু এরপরেও জয়সুরিয়াকে বিবেচনা করা হয় সর্বকালের অন্যতম সেরা একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে৷ এই জয়সুরিয়াও তার পুরোটা ক্যারিয়ারে খেলেছেন দলের স্বার্থে। ব্যক্তিগত পরিসংখ্যান নিয়ে কখনোই ভাবেননি। তার মাপের ব্যাটসম্যান ৩২ গড়ে ব্যাট করে ক্যারিয়ার শেষ করেছেন এটা মানাটা অন্যায়।
মডার্ন ক্রিকেটে গতানুগতিক খেলার জনক তিনি। পাওয়ারপ্লের ইউজ কিভাবে করে সেটা শিখিয়েছেন,দেখিয়েছেন তিনি। প্রথম বল থেকেই হিট করে বোলারদের আত্মবিশ্বাসকে ভেঙে চুরমার করে দেয়া শিখিয়েছেন তিনি। পিটিয়েই বলের ছাল চামড়া তুলে দিয়ে বলকে পুরনো করে ফেলতেন তিনি। এরপরে মিডল অর্ডাররা নির্ভার খেলতো।
শুধুমাত্র এই কারনেই বর্নিত দুই ভদ্রলোক নিজের দেশে তো বটেই বিশ্বজুড়েই সমাদৃত।